শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এতে দ্বিতীয় দিনের মতো বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যায় ৭০ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ১ হাজার ৩৪৪ পরিবার।
শনিবার সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ও যাদুকাটা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে জেলার ১১টি উপজেলার ৮১টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার ২০টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে।
মল্লিকপুরের বাসিন্দা সাহেদ মিয়া বলেন, ‘গতকাল থেকে পানিবন্দি আমরা। গেল সপ্তাহ থেকেই থেমে থেমে বন্যা হচ্ছে। ২৫ জুন থেকে টানা ৪ দিন পানিবন্দি ছিলাম। তবে এবার পাহাড়ি ঢলে পানির বেগ অনেক বেশি।’
নবীনগর এলাকার মোতাহার মিয়া জানান, আগের বন্যায় ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছিলেন তিনি। গতকাল শুক্রবার রাত থেকে আবার ঘরে হাঁটু পানি। ঘরে চুলা জ্বলছে না, খাবারও নেই। ছেলে-মেয়ে সবাইকে নিয়ে সমস্যার মধ্যে আছেন।
কাজির পয়েন্ট এলাকার দোকানি জাহিদ তালুকদার বলেন, ‘রাতে দোকান বন্ধের সময়ও পানি ওঠেনি, কিন্তু সকালে এসে দেখি দোকানে হাঁটু পানি।’
এদিকে, বন্যার কারণে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার সাথে বিভিন্ন ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া শুরু করেছে এবং এসব উপজেলার বাড়িঘর দোকানপাটে পানি ঢুকছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ১১টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। ৭০ হাজার ৩২০টি পরিবার পানিবন্দি ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ২৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় একটি করে মেডিকেল টিম নিয়োজিত আছে।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আশ্রয়কেন্দ্রে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ত্রাণ সহায়তায় ৫০০ বান্ডিল ঢেউ টিন, ৮ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৩০০ মেট্রিকটন চাল প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।