রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন
উম্ম আরা পান্টি, আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ): হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি অবস্থায় দুর্ভোগে জীবন-যাপন করছে কয়েকশ’ পরিবার। অনেকেই রয়েছেন ভাঙ্গন আতঙ্কে। সংকট দেখা দিয়েছে খাবার পানি ও গবাদি পশু খাদ্যের। সরকারি ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে; তবে সেটা বন্যা কবলিত জনগোষ্ঠীর তুলনায় অপ্রতুল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কালনী-কুশিয়ারার পাড় উপচে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রবেশ করছে পানি। বেশক’টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি কয়েকশ’ পরিবার। যে কারণে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষজন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ঘরে থাকা অসাবাপত্র ও মূল্যবান যন্ত্রপাতি।
সরেজমিনে কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, অনেকেই রয়েছেন নদী ভাঙ্গনের আতঙ্কে। বাসস্থান রক্ষা করতে কচুরীপানার আড় দিচ্ছেন বাড়ির চারদিকে। নলকূপগুলো পানির নিচে। নেই খাবার পানির ব্যবস্থা। দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর খাদ্য সংকট। আজমিরীগঞ্জ সদরের বাজারের লঞ্চ টার্মিনাল ঘাট, চর বাজারের সব্জি বাজার, কাঠ বাজার এলাকায় সবক’টি প্রতিষ্ঠানের ভেতরে প্রবেশ করেছে পানি। পৌর এলাকার আজিম নগর লম্বা হাটির নতুন বাড়ি, মুন্সি হাঠির নতুন বাড়ি, শরীফ নগরের নতুন বাড়ির বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত থাকলেও; বন্যা কবলিত জনগোষ্ঠীর তুলনায় তা অত্যন্ত কম।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাকাইলছেও ইউনিয়নের কালনীপাড়া ও আগলাহাঠির চান মিয়া, মস্তু মিয়া এবং অন্ধ ফরিদ মিয়াসহ প্রায় ১৫টি পরিবারের মানুষ পানিবন্দি। এছাড়াও উপজেলাজুড়ে কয়েকশ’ পরিবারের বসতঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জীবন-যাপন করছেন দুর্ভোগের সাথে।
অন্ধ ফরিদ মিয়ার স্ত্রী আলেকজান বেগম বলেন, কয়েকটি পরিবার কালনীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে এখনও তারা সরকারি কোন সহায়তা পাননি।
বদলপুর ইউনিয়নে পিরিজপুরের সামছু মিয়া, জিলানী মিয়া, জহুর হোসেন, খলিল মিয়া, মোবারক হোসেনসহ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি। সামছু মিয়া বলেন, তার বসতঘর পানির নিচে চলে গেছে। তার কয়েকটি গরু রয়েছে। কয়েকদিন ধরে এগুলোর খাবার নেই। এলাকাতে রয়েছে বিষধর সাপও।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মতিউর রহমান খান বলেন, কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র বানানো হয়েছে। বন্যা কবলিতদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে। আর যারা পানিবন্দি আছে তাদের নিকট পৌঁছে দেয়া হচ্ছে সরকারি ত্রাণ। যারা বাকী রয়েছেন আগামী রোববার নাগাদ সবার ঘরেই খাবার পৌঁছে যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।